গোত্র কি ?
গোত্র শব্দটির অর্থ বংশ বা গোষ্ঠীকে বোঝায়। সনাতন ধর্মে গোত্র মানে একই পিতার ঔরসজাত সন্তান-সন্ততি (সমূহ) দ্বারা সৃষ্ট বংশ পরম্পরা। কিন্তু গোত্র দ্বারা কখনো কখনো অঞ্চল এবং বিশেষ চিহ্ন নির্দেশ করে। বৈদিক শাস্ত্র অনুসারে, একটি বংশের রক্ত প্রবাহিত হয় পুরুষ পরম্পরায়। সুতরাং বংশের রক্তের ধারক ও বাহক হলো পুরুষ।
সনাতন ধর্মের বংশ রক্ষার ধারায় ছিলেন প্রথম সত্য যুগের শুরুতে ব্রহ্মার মানস সন্তানদের মধ্যে অন্যতম ঋষিগণ। পরবর্তীকালে অন্যান্য ঋষির বংশ পরম্পরাও পরিলক্ষত হয়। এই একেকজন ঋষির বংশ পরম্পরা তাদের নামে এক একটি গোত্র হিসেবে পরিচিত লাভ করে। সে হিসেবে একই গোত্রের বংশীয়গণ পরস্পর ভাইবোন।
এমনকি একই বংশের স্বজনেরা পরবর্তীকালে জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে, সাধন-ভজন, পরমেশ্বর ভগবানের বাণী প্রচারের প্রয়োজনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লে পিতার নামের সাথে গোত্র নামের গুরুত্ব প্রকাশ পায়। যেমন- কাশ্যপ মুনির বংশধরেরা নিজেদের “কাশ্যপ গোত্রস্য” বা কাশ্যপ মুনির বংশ পরিচয় দিয়ে থাকেন।
এভাবে পর্যায়ক্রমে আরও অনেক গোত্রের নাম পাওয়া যায়।
👉হিন্দুধর্মে গোত্র কতপ্রকার ও কী কী?
👇সনাতন ধর্মে প্রচলিত গোত্র সমূহ
- অত্রি গোত্র
- অগস্ত্য গোত্র
- আলম্যান/আলম্ব্যয়ন গোত্র
- আত্রেয় গোত্র
- কাশ্যপ গোত্র
- মৌদগল্য গোত্র
- ভরদ্বাজ গোত্র
- বশিষ্ট গোত্র
- বৃহস্পতি গোত্র
- বিশ্বামিত্র গোত্র
- জামদগ্ন্য গোত্র
- শিব গোত্র
- ভার্গব গোত্র
- শান্ডিল্য গোত্র
- ব্যাসঋষি গোত্র
- ধনন্বন্তরি গোত্র
- পরাশর গোত্র
- সাবর্ণ গোত্র
- কাত্যায়নী গোত্র
- গৌতম গোত্র
- ঘৃতকৌশিক গোত্র
- নাগঋষি গোত্র
- চান্দ্রায়ণ গোত্র
- বাঘ্রঋষি গোত্র
- হোবি ঋষি গোত্র
- বাতস্য গোত্র
- বৃদ্ধি গোত্র
- কৌন্ডল্য গোত্র
- শুনক গোত্র
- কৃষ্ণাত্রেয় গোত্র
- জাতুকর্ণ গোত্র
- কাণ্ব গোত্র
- কুশিক গোত্র
- আঙ্গিরস গোত্র
- গর্গ গোত্র
- বিষ্ণু গোত্র
- শক্তি গোত্র
👉 সমগোত্র কি ?
সমগোত্র মানে একই পিতৃবংশ। যেমন কাশ্যপ গোত্র। মুনি কশ্যপ ঋষির বংশধর। ব্রহ্মার মানস পুত্রগণের থেকে আগত প্রতিটি বংশ এক একটি গোত্র বা রক্তের ধারায় প্রবাহিত।
👉 সনাতন ধর্মে, গোত্রে বিবাহ নিষিদ্ধ কেন ?
সনাতন ধর্মে নিকটাত্মীয় বা সমগোত্রে বিবাহ নিষিদ্ধ। কারণ হিসেবে বৈদিক শাস্ত্রসমূহ বিশেষ করে মনুসংহিতায় বলা হচ্ছে, একই রক্তের সম্পর্কের কারো সাথে বিবাহ হলে সন্তান বিকলাঙ্গ, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী, মেধা ও বুদ্ধিহীন হয়। শিশু নানা রোগে জরাজীর্ণ হয়ে থাকে। তবে একান্তই প্রয়োজন হলে/ পাত্র-পাত্রী না পাওয়া গেলে ১৪ পুরুষ পেরিয়ে গেলে তখন বিবাহ করা যেতে পারে। তবে তা যথাসম্ভব এড়িয়ে চললেই ভালো।
জয় সনাতন 🙏 জয় হিন্দুত্ব ✊
হরে কৃষ্ণ🦚
(শেয়ার করুন, অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন)